মতি নন্দী
☰Fullscreen
Table of Content:
ভূমিকা: মতি নন্দী বাংলা সাহিত্য এবং সাংবাদিকতার জগতের এক
উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব।
জন্ম ও বংশপরিচয়: ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১০ জুলাই উত্তর কলকাতার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে মতি নন্দীর জন্ম। তাঁর বাবার নাম চুনীলাল নন্দী এবং মায়ের নাম মলিনাবালা নন্দী।
বাল্যজীবন ও শিক্ষাজীবন: ছেলেবেলাতেই পিতাকে হারান মতি
নন্দী। তাঁর পড়াশোনার সূচনা স্কটিশচার্চ স্কুল থেকে। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে এই বিদ্যালয় থেকেই তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে আইএসসি এবং ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। পরে আবার ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে মনীন্দ্রচন্দ্র কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্স-সহ গ্র্যাজুয়েশন পাস করেন।
কর্মজীবন: ক্যানিংয়ের কাছে ছোটো একটি গ্রামের স্কুলের শিক্ষকতা দিয়ে তাঁর কর্মজীবনের সূচনা। সন্তোষকুমার ঘোষের তত্ত্বাবধানে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকায় তাঁর নতুন কর্মজীবন নতুনভাবে শুরু করেন। বাংলা ক্রীড়াসাংবাদিকতার ধারা সম্পূর্ণ বদলে আধুনিক করে তুলেছেন মতি নন্দী। তাঁরই হাতে সাহিত্য ও সাংবাদিকতার মেলবন্ধন ঘটেছে।
সাহিত্যজীবন: ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় তাঁর
প্রথম গল্প 'ছাদ' প্রকাশিত হয়। তারপর পরিচয় পত্রিকায় তাঁর দ্বিতীয় গল্প 'চোরা ঢেউ' প্রকাশ পায়। ১৯৫৮-তে পরিচয় পত্রিকার পূজাসংখ্যায় প্রকাশিত তাঁর 'বেহুলার ভেলা' গল্পটি বাংলা সাহিত্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাঁর সাহিত্যকীর্তির তালিকা দীর্ঘ। এগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য-
উপন্যাস: সাদা খাম, উভয়ত সম্পূর্ণ, গোলাপ বাগান, ছায়া, জীবন্ত, ছায়া সরণীতে রোহিণী, দূরদৃষ্টি, বিজলীবালার মুক্তি প্রভৃতি।
শিশু-কিশোর কাহিনি: কোনি, স্টপার, স্ট্রাইকার, জীবন অনন্ত, তুলসী, মিনু-চিনুর ট্রফি, ধানকুড়ির কিংকং, কলাবতী প্রভৃতি।
চলচ্চিত্রে মতি নন্দীর সাহিত্য: মতি নন্দীর কোনি ও স্ট্রাইকার
উপন্যাস দুটি চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে সরোজ দে-র পরিচালনায় কোনি উপন্যাসটি চলচ্চিত্রায়িত হয়। এই চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত 'ফাইট, কোনি ফাইট' এক বিখ্যাত স্লোগানে পরিণত হয়, যা পরবর্তী সময়ে অনেক মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগায়।
পুরস্কার ও সম্মান: মতি নন্দী ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে আনন্দ পুরস্কার পান,
১৯৯১-এ 'সাদা খাম' উপন্যাসের জন্য পান সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। মতি নন্দী পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির শিশু ও কিশোর সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য ২০০০ খ্রিস্টাব্দে পুরস্কার পান।
২০০৮ খ্রিস্টাব্দে অসাধারণ সাংবাদিকতার জন্য তাঁকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রয়াণ: ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ৩ জানুয়ারি এই বিশিষ্ট ক্রীড়াসাংবাদিক ও সাহিত্যিকের জীবনাবসান হয়।