সৎকাজে দ্রুততা ও পারলৌকিক বিষয়ে মা-বাবার নজরদারি আবশ্যক
Table of Content:
জাগতিক ক্রিয়া-কর্মে সাধারণতঃ দ্রুততা, ক্ষিপ্রতা ও তাড়াহুড়ো কোন প্রশংসার কাজ নয়। বরং অনেকের কাছেই এটি নিন্দাহ। কারণ,
এতে অনেক সময় লাঞ্ছনার শিকারও হতে হয়। উপরন্তু কোরআন হাদীসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞাও এসেছে। কিন্তু সৎকাজ ও পারলৌকিক বিষয়ে দ্রুততা ও শীঘ্রতা একদিকে যেমন প্রশংসনীয় অন্যদিকে তেমনি শরীয়তে এর প্রতি নির্দেশও রয়েছে। এরশাদ হচ্ছে-
"আর তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, যা মুত্তাকীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।" (৩:১৩৩)
অন্যত্র অভিন্ন আদেশে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন-
"তোমরা অগ্রে ধাবিত হও স্বীয় প্রতিপালকের ক্ষমা এবং সেই জান্নাতের দিকে যা আকাশ ও জমিনের মত প্রশস্ত" (৫৭:২১)
সৎ কাজে একে অপর থেকে আগে বেড়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করা, প্রতিযোগিতা করা। আর এ জন্যই আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। অথচ আজ আমরা উদাসীনতার ভেলায় চড়ে অজানা গন্তব্যে ভেসে চলছি। কুরআনের নির্দেশ এবং হাদীসের সতর্ক বাণীর প্রতি আমাদের নাম মাত্রও ভ্রূক্ষেপ নেই। রাসূল (সঃ) বলেছেন-
হযরত উমর ইবনে মাইমূনুল আদভী (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূল (সাঃ) এক ব্যক্তিকে নসীহত করতে গিয়ে বলেছেন, পাঁচটি অবস্থার সম্মুখীন হওয়ার পূর্বে অপর পাঁচটি অবস্থাকে মূল্যায়ন কর। যৌবনকে বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার পূর্বে, সুস্থতাকে অসুস্থ হওয়ার পূর্বে, ধনাঢ্যতাকে দারিদ্রতার পূর্বে, অবসরতাকে ব্যস্ততা আসার পূর্বে, এবং জীবনকে মৃত্যু আসার পূর্বে। (তিরমিযী)
সুস্থতা :
আজ সুস্থ আছ। কাল যে অসুস্থ হবে না এর কি কোন নিশ্চয়তা আছে? মনে রেখো, পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ নেই যাকে কখনো অসুস্থতা গ্রাস করেনি। অসুস্থতা নিশ্চয় আসবে। তবে কখন, কিভাবে, কোন খানে তা কারো জানা নেই। তাই সুস্থতাকে গনীমত মনে কর।
স্বচ্ছলতা:
আজ তোমার স্বচ্ছলতা আছে। হয়তো আরেক ধাপ এগিয়ে তুমি একজন ধনাঢ্য ব্যক্তিত্ত। কিন্তু তোমার কি এটা জানা আছে যে, এ স্বচ্ছলতা বা ধনাঢ্যতার পরিধি কতটুকু? এ ধরণের বহু লোক দেখেছি যাদের অবস্থা দিনাদিন পরিবর্তন হয়ে গেছে। বহু ধনীর দুলালরা দিবা-নিশির ঘূর্ণিপাকে পড়ে আজ ফকির। আল্লাহই ভাল জানেন, কখন কি অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়। তাই সে মুহুর্ত আসার পূর্বেই মালদারীকে গনীমত মনে কর এবং টাকা-পয়সা ও ধন-সম্পদ আখেরাতের জীবনকে সুসজ্জিত করার কাজে ব্যয় কর।
অবসর:
নিজের অবসর সময়কে গনীমত মনে কর। এটা আল্লাহ তায়ালার বিশেষ দান। এটা সর্বদা বিদ্যমান থাকে না। বরং এক সময় এমন ব্যস্ততা এসে যায় যে, নিঃশ্বাস ফেলারও ফুত পাওয়া যায় না। তাই অবসর সময়কে কাজে লাগাও। পরিশেষে এ কথা সর্বদা স্মরণ রাখা উচিৎ যে, কোন মানুষই অমর নয়। মৃত্যু আসবেই। আর মৃত্যুর সাথে সাথেই ভাল-মন্দ সব ক্রিয়া কর্মই বন্ধ হয়ে যায়। তাই মৃত্যু আসার পূর্বেই জীবনকে মূল্যায়ন কর।