বাচ্চাদের আদর, ভালোবাসুন, উৎসাহিত করুন

Rumman Ansari   Software Engineer   2024-09-29 05:07:57   51  Share
Subject Syllabus DetailsSubject Details Login to Open Video
☰ TContent
☰Fullscreen

Table of Content:


সন্তান পরিপালনে মা-বাবার চূড়ান্ত চর্চা:

সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে মা-বাবার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সন্তানের মানসিক, শারীরিক, এবং সামাজিক বিকাশের জন্য পজিটিভ চর্চা যেমন প্রয়োজন, তেমনি নেগেটিভ চর্চা এড়িয়ে যাওয়া উচিত। নিচে সন্তান পরিপালনে মা-বাবার চূড়ান্ত চর্চা উল্লেখ করা হলো:


পজিটিভ চর্চা (সন্তানের সঠিক বিকাশের জন্য):

  1. পাশে দাঁড়াই (Support): সন্তান যখন কোনো সমস্যায় পড়ে বা নতুন কিছু শিখতে চায়, তখন তাকে সহায়তা করা এবং তার পাশে থাকা জরুরি।
  2. জড়িয়ে ধরি: সন্তানের প্রতি ভালোবাসা ও নিরাপত্তার অনুভূতি দিতে শারীরিক স্পর্শ যেমন আলিঙ্গন করা বা মাথায় হাত বুলানো।
  3. উৎসাহ দেই: সন্তানের সাফল্য বা প্রচেষ্টার প্রশংসা করে তার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা। এমনকি ছোট অর্জনগুলোকেও গুরুত্ব দিয়ে উৎসাহিত করা।
  4. আদর করা: সন্তানের প্রতি মমতা ও স্নেহ প্রকাশ করে তাকে নিরাপত্তা এবং ভালোবাসার অনুভূতি দেয়া।
  5. ভালোবাসুন: সন্তানকে শর্তহীন ভালোবাসা দিয়ে তার আবেগিক বিকাশ নিশ্চিত করা, যাতে সে ভালোবাসা ও যত্নের মূল্য বোঝে।
  6. সময় দেয়া: সন্তানের সঙ্গে মানসম্মত সময় কাটানো। কথাবার্তা, খেলা, বা তার মনের কথা শুনে মানসিক সংযোগ বাড়ানো।
  7. কথা বলা: সন্তানের সমস্যাগুলো নিয়ে খোলামেলা কথা বলা, তাকে তার অনুভূতি প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়া।
  8. মতামত শোনা ও সম্মান করা: সন্তানের চিন্তাভাবনা এবং মতামত গুরুত্ব দিয়ে শোনা, যাতে সে নিজস্ব মত প্রকাশ করতে শেখে।
  9. সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ করা: শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভালোবাসার পাশাপাশি কিছু নিয়ম ও সীমা স্থির করা, যা তাকে দায়িত্বশীল ও সুশৃঙ্খল হতে সাহায্য করবে।
  10. ভুল থেকে শেখানো: ভুল করলে কঠোর শাস্তির বদলে, তাকে তার ভুল থেকে শেখার সুযোগ দেয়া এবং সমাধানের পথ দেখানো।
  11. স্বাধীনতা দেয়া: সন্তানের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা দেয়া, কিন্তু তার উপর সঠিক নির্দেশনা রাখা।
  12. সমানাধিকারের শিক্ষা দেয়া: তাকে শেখানো যে সবাই সমান অধিকার ও সম্মানের যোগ্য এবং অন্যদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।

নেগেটিভ চর্চা (যা সন্তানের বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে):

  1. অপমান করা: সন্তানের প্রতি অহেতুক অপমান বা কটূক্তি করা তার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং মানসিক আঘাত সৃষ্টি করতে পারে।
  2. লাঞ্ছিত করা: শারীরিক বা মানসিকভাবে আঘাত করা সন্তানকে হতাশা এবং মানসিক অবসাদের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
  3. মাইর দেয়া: শারীরিক শাস্তি সন্তানের মধ্যে ভয় তৈরি করে এবং সম্পর্কের দূরত্ব বাড়ায়।
  4. বকা দেয়া: বেশি বকা দেয়ার ফলে সন্তানের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয় এবং তার আত্মসম্মানে আঘাত লাগে।
  5. অবহেলা করা: সন্তানের যত্ন না নেয়া, তার চাহিদাগুলোকে গুরুত্ব না দেয়া তাকে অবহেলিত এবং একা মনে করতে বাধ্য করতে পারে।
  6. বেশি চাপ দেয়া: সন্তানের উপর অত্যধিক পড়াশোনা বা অন্যান্য কাজে চাপ প্রয়োগ করা তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে।
  7. তুলনা করা: অন্যদের সাথে তুলনা করে সন্তানের মূল্যায়ন করা তার আত্মসম্মানে আঘাত করতে পারে এবং হীনমন্যতা তৈরি করতে পারে।
  8. অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ: সব বিষয়ে সন্তানের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা তার ব্যক্তিগত বিকাশ ও স্বাধীন চিন্তাধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

উপসংহার:

সন্তানের বিকাশের জন্য পজিটিভ চর্চাগুলো তাদের আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতা, এবং মানসিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, নেগেটিভ চর্চা তাদের মনোবল ভেঙে দিতে পারে এবং সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে পারে। মা-বাবার উচিত সন্তানকে ভালোবাসা ও যত্নের মাধ্যমে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা এবং ভুল চর্চা থেকে বিরত থাকা।