আলফা ওয়েভ

Rumman Ansari   Software Engineer   2024-06-05 11:22:44   67  Share
Subject Syllabus DetailsSubject Details
☰ TContent
☰Fullscreen

Table of Content:

আলফা ওয়েভ এর উপকারিতা

মনকে শান্ত করে - আলফা ওয়েভ শরীরকে রিলাক্স করে। মনকে শান্ত করে। ব্রেনকে পরিচ্ছন্ন করে, ব্রেন সুষ্ঠভাবে চিন্তা করতে পারে।

সৃজনশীলতা বাড়ায়- লেখক, সাহিত্যিকদের ব্রেনে আলফা ওয়েভ বেশি থাকে।

সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ায় - ব্রেনে আলফা ওয়েভ কম থাকলে বাম ব্রেনকে একাই সমস্যা চিন্তা করার লোডটা নিতে হয়, আলফা ওয়েত বেশি থাকলে বাম, ডান ব্রেনের সংযোগ হয়, ফলে ব্রেনের দুই অংশ মিলে সমস্যা সমাধানের চিন্তা করে, ফলে সমাধান চিন্তা করা সহজ হয়। অংক করার আগে বা যে কোন সমস্যা সমাধানের আগে ৫-১০ মিনিট কোরঅ- ান পড়লে বা শুনলে বা জিকির করলে ব্রেনে আলফা ওয়েভ তৈরি হয় এবং এসব সমস্যা সমাধান করা অনেক সহজ হয়।

খেলাধুলায় দক্ষতা বাড়ায়- গলফ খেলার গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেনে আলফা ওয়েভ বেশি থাকাকালীন সবচেয়ে সুন্দর শটটা খেলোয়াড়রা খেলতে পারে।

সুপার লার্নিং - কম পরিশ্রমে তাড়াতাড়ি শেখাকে বলে সুপার লার্নিং। ব্রেনে আলফা ওয়েভ বেশি থাকাকালীন ব্রেনের বাম, ডান অংশের সংযোগ হয় ভালমত, ফলে দুই অংশ মিলে শেখার প্রক্রিয়াকে সহজ ও দ্রুত করে।

ইতিবাচক চিন্তা বাড়ায়। নেতিবাচক চিন্তা কমায়। 

বিষন্নতা, দুশ্চিন্তা কমায়- আলফা ওয়েভ ব্রেনের নিউরনগুলোতে সেরোটোনিন রিলিজ করে। ফলে বিষন্নতা ও দুশ্চিন্তা কমে।  

✓ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

✓ আভ্যন্তরীণ সচেতনতা বাড়ায়- বিটা ওয়েভ বাইরের জগতের প্রতি

✓ সচেতনতা বাড়ায় আর আলফা ওয়েভ নিজের শরীর ও মনের প্রতি সচেতনতা বাড়ায়। ফলে শরীর, মন ভাল থাকে।

✓ কাজ কর্ম, আচার আচরণ ভাল হয়।

✓ চেহারা উজ্জ্বল হয়।

✓ ব্যাক্তিত্ব উন্নত হয়।

✓ আরও অনেক অনেক উপকার।

আলফা লেভেল পড়াশোনা টা কি?

গভীর মনযোগে পড়াশোনা করা, যে গভীর মনযোগে ব্রেইন এ আলফা ওয়েভ তৈরী হয়।

এই আলফা ওয়েভ মুগ্ধ হয়ে ঝরণা দেখি যখন, মুগ্ধ হয়ে বৃষ্টি দেখি যখন.. তখনও তৈরী হয়।

Guyton সাহেব বলেন- Quiet active state of cerebration produces alpha wave in the brain, মানে মুগ্ধ হয়ে, মনোযোগে কোন কাজ করলে ব্রেইন এ আলফা ওয়েভ তৈরী হয়।

আলফা লেভেল এ পড়াশোনা করলে কি লাভ?

মনোযোগ বাড়বে, পড়া মনে থাকবে বেশী,পড়ায় আনন্দ হবে, বোরিং লাগবে না। ক্লান্তি আসবে না। চেহারায় ক্লান্তির ছাপ পড়বে না, বরং চেহারায় একটা গামার আসবে। মন ফ্রেশ থাকবে। মানসিক growth ভাল হবে।

কিভাবে আলফা লেভেল এ পড়াশোনা করা যায়?

গোছানো নিরিবিলি পরিবেশ লাগবে। মন বিক্ষিপ্ত হওয়ার উপাদানগুলো থেকে একটু দূরে থাকতে হবে । ধর্মীয় কাজ করলে যেমন নামাজ পড়লে, জিকির করলে, ধর্মীয় বই পড়লে আলফা লেভেল এ পড়াশোনা করা সহজ হয়।

কোরআন এবং আলফা তরঙ্গ

মেডিকেলে ভর্তির জন্য কোচিং করার সামর্থ্য ছিল না আমার। বাড়িতে বসে বসে কোরআন পড়তাম আর ভর্তি পরীক্ষার পড়া পড়তাম।

ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্টের দিন আমার বন্ধুরা রংপুর মেডিকেলের লিস্টে আমার রোল নাম্বারটা খুব নাকি খুজেছিল। খুজে পায়নি। পরে একজন ফান করে বলেছিল, ডিএমসি (ঢাকা মেডিকেল কলেজ) এর লিস্টে দেখিতো। ডিএমসির লিস্টে আমার রোল নাম্বারটা দেখে তারা হতবাক হয়ে যায়।

পড়াশোনার জন্যে দরকার আল্লাহর রহমত। আলফা তরঙ্গ সহায়ক। কোরআন পড়লে আল্লাহর রহমত লাভ হয় এবং ব্রেনে আলফা তরঙ্গ তৈরি হয়। পড়তে বসার আগে কোরআন পড়া বা তেলাওয়াত শোনা তাই খুব উপকারী।

আলফা তরংগে মনোযোগ বাড়ে অনেক, সৃজনশীলতা বাড়ে অনেক। বলা হয়, পৃথিবীর যত বড় বড় সৃষ্টি যেমন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, সাহিত্য ইত্যাদি ব্রেনে আলফা তরংগ থাকা অবস্থায় হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ ব্রেন আলফা তরংগে থাকলে ব্যক্তিত্বও উন্নত হয় অনেক।)

কোরআন পড়লে বা শুনলে ব্রেনে আলফা তরঙ্গ তৈরি হয়। গভীর মনে- াযোগে জিকির করলেও ব্রেনে আলফা তরঙ্গ তৈরি হয়। আরও অনেকভাবে ব্রেনে আলফা তরংগ তৈরি হতে পারে। ভোর রাতে ব্রেনে আলফা তরঙ্গ বেশি থাকে। এজন্যে এসময় বেশি করে ইবাদত করতে উৎসাহিত করা হয়, যেমন তাহাজ্জুদ নামাজ। কারণ এসময় ব্রেনে আলফা তরঙ্গ বেশি থাকে বলে ইবাদতে মনোযোগ আসে বেশি।

কোরআন পড়ে বা শুনে পড়তে বসলে

• অনেক্ষণ একটানা পড়ার ধৈর্য্য হয় (ব্রেনে সেরোটোনিন নিঃসরণ এর জন্যে)

■ পড়া শেখার ক্ষমতা বাড়ে ৩ গুণ, স্মরণ শক্তি বাড়ে (ব্রেনে থিটা ওয়েভ তৈরি হওয়ার ফলে)।

• চেহারার গামার বা সৌন্দর্য বাড়ে, ব্যক্তিত্ব উন্নত হয় (ব্রেনে আলফা ওয়েভ তৈরি হওয়া ও মেলাটোনিন নিঃসরণের ফলে)।

আলফা তরঙ্গ ও সৃজনশীলতা

ভোর রাতে (রাতের চতুর্থ প্রহর অর্থাৎ রাত ৩ টা থেকে ভোর ৬টা) ব্রেনে আলফা তরঙ্গ বেশি থাকে।

কাজী নজরুল ইসলাম তার বিখ্যাত' কারার ঐ লৌহ কপাট' কবিতাটি রাত তিনটা থেকে ফজরের আজান হওয়া পর্যন্ত সময়ে লিখেছিলেন।

খোলা আকাশে ব্যায়ামের (aerobic exercise) সময় বেনে আলফা ওয়েভ তৈরি হয়। আইন্সটাইন নিয়মিত সাইকেল চালাতেন। তিনি বলেন, e =mc² সুত্রটা আমার মাথায় সাইকেল চালানোর সময় এসেছিল ।

আলফা তরংগ বেশি থাকলে মানুষ পাপ কাজ করতে পারে না।

মানুষের ব্রেইনে যখন আলফা তরঙ্গ বেশি থাকে, তখন বিবেক (prefrontal cortex) সক্রিয় থাকে, তখন মানুষ পাপ কাজ করতে পারে না।

নামাজ পড়লে, জিকির করলে, ধ্যান করলে ব্রেনে আলফা তরংগ বেশি তৈরি হয়।

আলফা তরংগ ও শরীরে বিভিন্ন হরমোন বা কেমিক্যাল নিঃসরণ

গভীর মনোযোগে নামাজ পড়া, জিকির করা, কোরআন পড়া, গভীর মনোযোগে পড়াশোনা করা, ধ্যান (মেডিটেশন) করা ইত্যাদি কাজে ব্রেনে আলফা তরঙ্গ তৈরি হয়। এ সময় শরীরে বিভিন্ন হরমোন বা কেমিক্যাল নিঃসরণ বাড়া বা কমার মাধ্যমে শরীর, মনের বহুবিধ উপকার হয়।

১. সেরোটোনিন - বেশি নিঃসরণ হয়। মন ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিষন্নতা কমায়, বোরিংনেস কমায়।

২. কর্টিসল- কম নিঃসরণ হয়। বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক চাপে শরীরে কর্টিসল বেশি নিঃসৃত হয়। বেশি কর্টিসল শরীরের জন্য ক্ষতিকর- এতে শরীরে কালো দাগ হতে পারে, বয়সের ছাপ পড়তে পারে, হার্টের ক্ষতি হয় ইত্যাদি। ব্রেনে আলফা তরঙ্গ থাকলে শরীরে কর্টিসল নিঃসরণ কম হয়। 

৩. গাবা- বেশি নিঃসরণ হয়। মাথা শান্ত করে।

8. মেলাটোনিন - বেশি নিঃসরণ হয়। ভাল ঘুম করে, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে সহায়তা করে। শরীর সতেজ করে, গ্লামার বাড়ায়।

৫. DHEA- বেশি নিঃসরণ হয়। এটি শারীরিক ও মানসিক চাপ কমায়, aging process (শরীরে বয়স জনিত পরিবর্তন) ধীর করে।

৬. গ্রোথ হরমোন - বেশি নিঃসরণ হয়। শরীরের ক্লান্তি কমায়, দুর্বলতা কমায়।স

৭. এন্ডোরফিন - বেশি নিঃসরণ হয়। মনে ফুর্তি আনে।

গভীর মনোযোগে যারা পড়াশোনা করে, তারা মনে অনেক প্রশান্তি অনুভব করে

গভীর মনোযোগে যারা পড়াশোনা করে, তারা মনে অনেক প্রশান্তি অনুভব করে, তাদের মধ্যে সুখী সুখী ভাব থাকে। এক ঘন্টা গভীর মনোযোগে পড়ার পর মাঠে বা ফাকা রাস্তায় হাটতে থাকা কেউ আমার এ কথাগুলোর সত্যতা উপলব্ধি করতে পারবে।

দীর্ঘ দিন যারা মনোযোগে পড়াশোনা করে, তাদের মধ্যে creativity তৈরি হয়, তারা productive হয়।

যে সব কথা বললাম, এসবের ব্যাখ্যা হল, গভীর মনোযোগে পড়লে ব্রেনে বেশি পরিমাণ আলফা ওয়েভ তৈরি হয়। ব্রেনে বেশি আলফা ওয়েভ এর কারণে উল্লেখিত উপকারগুলো পাওয়া যায়।

ঘুম কম প্রয়োজন হয়

যারা কোরআন পড়ে, জিকির করে, তাদের বেনে অনেক সময় ধরে আলফা ওয়েভ থাকে । তাদের ঘুম কম প্রয়োজন হয়, অল্প ঘুমে হয়ে যায়।