হজরত ওমর ফারুক রা. / হজরত উমর ফারুক (রা) / উমর ইবনুল খাত্তাব / ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ):

Rumman Ansari   Software Engineer   2024-09-19 06:29:29   162  Share
Subject Syllabus DetailsSubject Details 24 Questions
☰ TContent
☰Fullscreen

Table of Content:

পিতা মাতা

উমর (রা) এর পিতার নাম খাত্তাব। মাতার নাম হানতামা ।

হজরত উমর ফারুক (রা)  - পিতার নাম খাত্তাব, মাতার নাম হানতামা
Figure: হজরত উমর ফারুক (রা) - পিতার নাম খাত্তাব, মাতার নাম হানতামা


জন্ম

৫৮৩ খ্রিষ্টাব্দ আদ্দিয়া নামক গোত্রে উমর (রা) জন্মগ্রহণ করেন।


মৃত্যু

৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দ হযরত উমর (রা) ২৭ জিলহজ শাহাদাতবরণ করেন।


বিবাহ


ইসলাম গ্রহণ


যুদ্ধে অংশগ্রহণ


এক নজরে উমর (রা)

৫৮৩ খ্রিষ্টাব্দ আদ্দিয়া নামক গোত্রে উমর (রা) জন্মগ্রহণ করেন।
৬০৭ খ্রিষ্টাব্দ  উমর (রা) ৩৩ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন।
৬২২ খ্রিষ্টাব্দ  উমর (রা) মদীনায় হিজরত করেন।
৬২৩ খ্রিষ্টাব্দ  উমর (রা)-এর পরামর্শ অনুযায়ী আযানের সূত্রপাত হয়।
৬২৪ খ্রিষ্টাব্দ  বদর যুদ্ধে বারোজন সাহাবীসহ অংশগ্রহণ করেন।
৬২৫ খ্রিষ্টাব্দ  উমর (রা) ওহুদ যুদ্ধে অংশ নেন।
৬২৭ খ্রিষ্টাব্দ  খন্দক বা পরিখার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
৬২৮ খ্রিষ্টাব্দ হোদায়বিয়ার সন্ধির বিরোধিতা করেন। পরে অবশ্য সন্ধিতে স্বাক্ষর করেন।
৬২৯ খ্রিষ্টাব্দ  খায়বর যুদ্ধে তিনি সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
৬৩১ খ্রিষ্টাব্দ তাবুক অভিযানে উমর (রা) অর্ধেক সম্পদ দান করেন।
৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সাথে বিদায় হজে উমর (রা) মক্কা যাত্রা করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় হযরত আবু বকর (রা) ইসলামের প্রথম খলিফা নির্বাচিত হন।
৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দ  হযরত আবু বকর (রা) ইন্তেকাল করেন। উমর (রা) দ্বিতীয় খলিফা নির্বাচিত হন।
৬৩৫ খ্রিষ্টাব্দ  সেনাপতি মুসান্নার নেতৃত্বে পারস্য বিজিত হয়। সেনাপতি খালেদ দীর্ঘদিন অবরোধের পর দামেস্ক দখল করেন।
৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দ  জালুলার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মুসলমানরা বায়তুল মাকদাস অধিকার করেন।
৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দ  আমওয়াসের মহামারীতে আবু উবায়দা ও মুআযসহ কয়েক হাজার সৈন্যের মৃত্যুবরণ।
৬৪১ খ্রিষ্টাব্দ  আমর ইবনে আস মিসর জয় করেন। নিহওয়াদ্দের যুদ্ধে পারসিকদের সাথে মুসলমানরা বিজয় লাভ করে।
৬৪৩ খ্রিষ্টাব্দ  খলিফার নির্দেশে আমের সুয়েজখাল খনন করেন এবং নীলনদের সাথে লোহিত সাগরকে যুক্ত করা হয়।
৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দ  হযরত উমর (রা) ২৭ জিলহজ শাহাদাতবরণ করেন।

যরত ওমর (রা.)। পুরো নাম উমর ইবনুল খাত্তাব। জন্ম ৫৮৩ খ্রিষ্টাব্দে। মৃত্যু ৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দ। তিনি বড় হয়েছেন আর দশটা কুরাইশ বালকের মতোই শৈশবে উটের রাখালী করে। তিনি ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা এবং প্রধান সাহাবিদের অন্যতম। হযরত আবু বকর (রা.) এর মৃত্যুর পর তিনি দ্বিতীয় খলিফা হিসেবে দায়িত্ব নেন। 

হযরত ওমর (রা.) একাধারে ইসলামী আইনের একজন অভিজ্ঞ আইনজ্ঞ, ন্যায় পরায়ন বাদশা। তার এই ন্যায় পক্ষাবলম্বন করার কারণে তাকে আল ফারুক (সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী) উপাধি দেওয়া হয়। তার ক্ষেত্রেই সর্বপ্রথম আমিরুল মুমিনিন উপাধিটি ব্যবহৃত হয়েছে।

হযরত ওমর (রা.) শাসনামলে খিলাফতের সীমানা অকল্পনীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। সাসানীয় সাম্রাজ্য ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের দুই তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণে আসে মুসলিমদের হাতে। তার শাসনামলে জেরুজালেম মুসলিমদের হস্তগত হয়। তিনি পূর্বের খ্রিষ্টান রীতি বদলে ইহুদিদেরকে জেরুজালেমে বসবাস ও উপাসনা করার সুযোগ দিয়েছিলেন। তিনি ইসলামী সাম্রাজ্যকে পূর্বে পারস্য থেকে পশ্চিমে বর্তমান তিউনিসিয়া, দক্ষিণে ইয়েমেন থেকে উত্তরে ককেশাস পর্বত পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। ঈসায়ী ৬৪৪ সালের ৩রা নভেম্বর, ২৩ হিজরীর ২৬শে জিলহজ্জ্ব জনৈক পারসিক কৃতদাসের হাতে শহীদ হন। 

তিনি ইসলাম গ্রহণের পর রাসূল (সা.) এর অন্যতম প্রধান সহকারী হিসেবে পরিনত হন। তার ইসলাম গ্রহণের পর পরই মুসলমানরা প্রথম প্রকাশ্যে কাবায় নামায আদায় করার সাহস করে। তিনি ছিলেন রাসূল (সঃ) এর শ্বশুর। অর্থাৎ ওমর (রাঃ) এর মেয়ে হাফসা (রাঃ) ছিলেন রাসূল (সঃ) এর স্ত্রী।

হযরত ওমর (রা.) এর জীবনের অসংখ্য অবদানের কিছু অবদান সংক্ষেপে তুলে ধরা হল:

১. হযরত ওমর (রা.) ছিলেন তৎকালীন আরবের গুটিকয়েক শিক্ষিত লোকদের মধ্যে অন্যতম। সমগ্র আরবে স্বল্প যে কয়জন লোক অক্ষরজ্ঞানের অধিকারী ছিল, হযরত ওমর (রা.) ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। 

২. যৌবনে হযরত ওমর (রা.) কুস্তিগীর, মল্লযোদ্ধা এবং বক্তা হিসেবে খ্যাত ছিলেন। 

৩. হযরত ওমর (রা.) ইসলাম গ্রহণের পূর্বে ইসলাম প্রচারের প্রচন্ড বিরোধী ছিলেন। ইসলাম প্রচারের  বিরোধীতা করতে গিয়ে তিনি এতদূর অগ্রসর হন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে হত্যার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। 

৪. হযরত ওমর (রা.) এর ইসলাম গ্রহণের পূর্বে তার ভাই হযরত যায়েদ ইবনে খাত্তাব (রা.), বোন হযরত ফাতেমা ইবনে খাত্তাব (রা.) এবং ভগ্নিপতি হযরত সাঈদ ইবনে যায়েদ (রা.) তার পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করেন। 

৫. রাসূল (সা.) কে হত্যা করতে গিয়ে তিনি তার বোন ও ভগ্নিপতির ইসলাম গ্রহণের খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বোনের বাড়ীতে যান। পরে ঘটনাক্রমে সেখানে তিনি সূরা ত্বাহার প্রথম ছয় আয়াত পাঠ করার সুযোগ পান। সূরা ত্বাহার এই ছয় আয়াত পাঠ করার পর তিনি ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন এবং রাসূল (সা.) এর কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন।  

৬. হযরত ওমর (রা.) এর উৎসাহেই রাসূল (সা.) কাবার চত্ত্বরে মুসলমানদের নিয়ে জাময়াতে নামায আদায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং এর মাধ্যমে মুসলমানরা প্রথমবারের মত মক্কায় প্রকাশ্যে নামায আদায় করে। 

৭. রাসূল (সা.) প্রথম তাকে আল-ফারুক (সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী) নামে ভূষিত করেন। 

৮. নামাযের জন্য আযান দেওয়ার ব্যবস্থা হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রা.) এবং হযরত ওমর (রা.) এর স্বপ্নের ভিত্তিতেই গ্রহণ করা হয়। 

৯. রাসূল (সা.) এর ইন্তেকালের পর খলীফা হিসেবে হযরত আবু বকর (রা.) এর নাম প্রথম হযরত ওমর (রা.) উত্থাপন করেন এবং তিনিই প্রথম আবু বকর (রা.) এর কাছে বাইয়াত করেন। 

১০. হযরত আবু বকর (রা.) হযরত ওমর (রা.) এর পরামর্শেই প্রথম কুরআন সংকলনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং এই লক্ষ্যে হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) এর নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেন। 

১১. হযরত আবু বকর (রা.) তার ইন্তেকালের সময় হযরত ওমর (রা.) কে খলীফা হিসেবে নিযুক্তির জন্য মুসলিম জনসাধারণের কাছে সুপারিশ করে যান এবং এই সুপারিশের ভিত্তিতেই হযরত ওমর (রা.) খলীফা হিসেবে নির্বাচিত হন। 

১২. হযরত ওমর (রা.) প্রথম খলীফা যিনি আমীরুল মুমিনিন (বিশ্বাসীদের নেতা) উপাধিতে ভূষিত হন। 

১৩. হযরত ওমর (রা.) এর শাসনকালেই তৎকালীন বিশ্বের দুই পরাশক্তি; পারসিক সাসানীয় সাম্রাজ্য এবং রোমান বাইজান্টানীয় সাম্রাজ্যকে মুসলমানরা চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে সমগ্র পারস্য সাম্রাজ্যে এবং বাইজান্টানিয় শাসনাধীন এশীয় ও আফ্রিকান অঞ্চলসমূহে মুসলিম শাসনের বিস্তার করে। 

১৪. ৬৩৭ ঈসায়ীতে হযরত ওমর (রা.) জেরুসালেম সফর করেন এবং রোমানদের হাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত অসংখ্য নবীর স্মৃতিধন্য বাইতুল মুকাদ্দাস তথা মসজিদুল আকসাকে পুননির্মাণ করেন। 

১৫. মুসলিম খিলাফতের সচিবালয়, বাইতুল মাল (কোষাগার), সেনানিবাস, প্রাদেশিক শাসন ও বিচারব্যবস্থা ওমর (রা.) প্রথম প্রবর্তন করেন। এছাড়া মুসলিম মুদ্রা ব্যবস্থা এবং হিজরী ক্যালেন্ডারের প্রবর্তন তার হাত ধরেই সম্পন্ন হয়।  

১৬. হযরত ওমর (রা.) প্রথম মুসলিম শাসক যিনি দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় শাহাদাত বরণ করেন।


MCQ Available

There are 8 MCQs available for this topic.

8 MCQ