আবদুর রহমান ইবনে আওফ ('রাযি.')

Rumman Ansari   Software Engineer   2024-06-09 02:25:56   44  Share
Subject Syllabus DetailsSubject Details
☰ TContent
☰Fullscreen

Table of Content:

৬ষ্ঠ হিজরীর শাবান মাস। রাসূল ('সা.') বনু কালাবের দিকে একটি সামরিক বাহিনী প্রেরনের প্রয়োজন পড়লো। এ গোত্র দাওমাতুল জুনদুবের নিকটে বসবাস করতো এবং খুবই শক্তিশালী ছিল। রাসূল ('সা.')-এর প্রত্যাশা ছিলো এমন, এই অভিযানের নেতৃত্বে এমন একজনের উপর অর্পিত হোক, যিনি তাবলীগের দায়িত্ব সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে পারেন। আবার যুদ্ধের প্রয়োজন হলে নেতৃত্ব দিতে পারেন।

নবীজী ('সা.') নির্বাচনী দৃষ্টি নিজের এমন একজন জীবন উৎসর্গকারীর ওপর নিক্ষিপ্ত হলো, যে নবুওয়াত প্রাপ্তির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত প্রত্যেক সময়ই হক পথে জীবন উৎসর্গের বাস্তব প্রমাণ পেশ করেছে। তিনি একজন মানুষ প্রেরণ করে তাঁকে ডেকে পাঠলেন।

অল্পক্ষণের মধ্যেই উজ্জল লাল বর্ণের এবং দীর্ঘ আকৃতির এক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ রাসূল ('সা.') নিকট উপস্থিত হলেন। লম্বা দাড়ি এবং মাথায় কান পর্যন্ত ঝাঁজড়া চুল তাঁর ব্যক্তিত্বকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল। তিনি এসে বলেন, হে রাসূল! আমার মাতা-পিতা আপনার উপর কুরবান হোক। এ গোলামকে কি জন্য স্মরণ করেন। তাকে কি কোন দায়িত্ব দেয়া হবে? রাসূল ('সা.') তাঁকে অত্যন্ত স্নেহের সাথে সামনে বসালেন। সে অভিযানের কথা বিস্তারিত বলেন এবং অত্যন্ত স্নেহ ও ভালোবাসর সাথে তাঁর পাগড়ী খুলে নিজের পবিত্র হাত দিয়ে তাঁর মাথার ওপর কালো পাগড়ী বাঁধলেন। পাগড়ীটির চার আঙুল বারবার তাঁর পিঠের ওপর ছেড়ে দিলেন।

অতপর তাঁকে সাতাশ' মুজাহিদের নেতা নিয়োগ করে পুনরায় হামদ ও ছানার পর তাদেরকে উদ্দেশ্যে করে বলেন:

মহান আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য তৈরি হও। আল্লাহর নাফরমানদের বিরুদ্ধে লড়াই কর। কোনোভাবেই খেয়ানত করো না, কোন লাশ বিকৃত করো না এবং শিশুদেরকে হত্যা করবে না। তোমাদের প্রতি এটা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি এবং নবীর চরিত্র মনে করবে। তাঁরা রাসূল ('সা.') কথার সামনে মাথা নত করে সেই নির্দেশের ওপর আমল করার প্রতিশ্রুতি দিলেন এবং সঙ্গীদেরসহ দাওয়াতুল জুন্দুলে রওয়ানা হয়ে গেলেন।

নবীজী ('সা.') এ সাহাবী যাঁর দস্তারবন্দী বা পাগড়ী বাঁধার কাজ স্বয়ং রাসূল ('সা.') নিজের পবিত্র হাতে সম্পাদন করেছেন। আর যাঁকে এক গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের নেতৃত্বের জন্য নির্বাচিত করেন, তিনি ছিলেন বিশিষ্ট সাহাবী আবদুর রহমান ইবনে আওফ ('রাযি.')।

বিশিষ্ট সাহাবী আবদুর রহমান ইবনে আওফ ('রাযি.') সেই দশ জালিলুল কদর সাহাবীর অন্যতম ছিলেন যাঁদেরকে রাসূল ('সা.') বিশেষভাবে নাম উল্লেখ করে জান্নাতী হওয়ার সুসংবাদ দিয়েছিলেন এবং যিনি আশারায়ে মুবাশশারাহর মুহতাম বিশ শান উপাধিতে বিখ্যাত হন। আবদুর রহমান ইবনে আওফ ('রাযি.') কুরাইশের বনু যুহরা খান্দানের সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিলেন। তাঁর নসবনামা নিম্নে পেশ করা হলো-

আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রাযি.)-এর বংশ পরিক্রমা

আবদুর রহমান বিন আওফ ('রাযি.') আবদি আওফ অথবা আবদি জাওফ বিন আবদি বিন হারিছ বিন যুহরাহ বিন কিলাব বিন মুররাহ।

বিশেষ করে তাঁর নসব ৬ষ্ঠ পুরুষে কিলাব বিন মুররা হতে গিয়ে রাসূল ('সা.') নসবনামার সাথে মিলে যায়। রাসূল ('সা.') মাতা আমেনাও বনু যুহরার সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিলেন এবং তাঁর নসবনামা যুহরাহ বিন কিলাবে গিয়ে আবদুর রহমান ইবনে আওফ ('রাযি.')-এর নসবের সাথে মিলে যায়। যুহরাহ রাসূল ('সা.') প্রপিতামহ কুসাই বিন কিরাবের ভাই ছিলেন।

আবদুর রহমানের ('রাযি.') মাতার নাম শিফা। ('রাযি.') বিনতে আওফ বিন আবদি বিন হারিছ বিন যুহরাহ ছিল। কতিপয় রেওয়ায়াতে তাঁর নাম সুফিয়া সাফা এবং দাবায়য়াহও উল্লেখ করা হয়েছে।

তাছাড়া রাবীরা অধিকাংশই শিফা ('রাযি.') নামকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। শিফা ('রাযি.') স্বামী আওফ বিন আবদি আওফের চাচার কন্যা ছিলেন। তিনি সাহাবিয়া হওয়ার মর্যাদাও লাভ করেন।