কাজী নজরুল ইসলাম
Table of Content:
কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) : কাজী নজরুল ইসলাম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ। ১৩২৬ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্যনামক পত্রিকায় তাঁর প্রথম কবিতা মুক্তি প্রকাশিত হয়। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে বিজলী পত্রিকায় বিদ্রোহী কবিতা প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র বাংলায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কবি তাঁর কবিতায় কেবল ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নয়, সমস্ত অন্যায় অবিচার ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। তাঁর রচিত বইগুলো হলো - অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, সাম্যবাদী, সর্বহারা, ফণীমনসা, প্রলয়শিখা।
ভূমিকা:
কবি নজরুল ছিলেন দুরন্ত যৌবনের দূত। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় নজরুল সম্বন্ধে বলেছেন, "নজরুলের মধ্যে যৌবনদীপ্ত বাঙালির সেই আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ হল।" (অনিঃশেষ নজরুল কথাসাহিত্য, কাজী নজরুল সংবর্ধনা সংখ্যা)।
জন্ম:
পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মে কবির জন্ম। তাঁর ডাকনাম দুখুমিঞা। বাবা কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন। ছেলেবেলাতেই তাঁর বাবা মারা যান।
কর্মজীবন:
চাকরের কাজ থেকে শুরু করে ৪৯ নং বাঙালি পল্টনে যোগদান পর্যন্ত বিভিন্ন পেশার মধ্য দিয়ে তিনি জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন। পরাধীন ভারতে ইংরেজ শাসন ও শোষণ, ধর্মীয় বিদ্বেষ, জাতিভেদ, সাম্প্রদায়িকতা ও রাজনৈতিক উৎপীড়ন দেখে নজরুল প্রতিবাদে মুখর হন এবং কলম ধরেন।
সাহিত্যজীবন:
নজরুলের প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকায়। কবিতাটির নাম 'মুক্তি'। প্রথমদিকে তাঁর গল্পই পাঠকদের কাছে বেশি আকর্ষণীয় হয়। এই সময়ে লেখা নজরুলের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গল্প হল-'বাউন্ডুলের আত্মকাহিনি', 'হেনা', 'ব্যথার দান' ইত্যাদি। সেনাবাহিনী থেকে ফিরে আসার পর মোসলেম ভারত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে নজরুলের পত্রোপন্যাস বাঁধনহারা। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে নজরুলের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ধূমকেতু পত্রিকা। স্বাধীনতার সপক্ষে কবির লড়াকু লেখা তখন দেশবাসীর মধ্যে প্রবল উন্মাদনা সৃষ্টি করেছিল। ওই বছরেই তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ অগ্নিবীণা প্রকাশিত হয়। প্রকাশের কিছুদিনের মধ্যেই বইটির প্রথম সংস্করণ শেষ হয়ে যায়। ধুমকেতু-তে 'আনন্দময়ীর আগমনে' লেখার জন্য কবিকে গ্রেফতার করা হয়। এক বছর পর কারামুক্ত হলে কবি কুমিল্লায় আসেন। লাঙল পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর বিখ্যাত কবিতা 'সাম্যবাদী'। পরে গণবাণী পত্রিকাকে কেন্দ্র করে নিপীড়িত মানুষের প্রতি সহানুভূতির প্রকাশে কবির রাজনৈতিক চেতনা যেন নতুন রূপ লাভ করে। এ ছাড়াও কবির কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ হল-দোলনচাঁপা (১৯২৩), বিষের বাঁশী (১৯২৪), ভাঙার গান (১৯২৪), ছায়ানট (১৯২৫), সর্বহারা (১৯২৬), ফণীমনসা (১৯২৭), প্রলয়শিখা (১৯৩০)। ঠুমরি, গজল, কীর্তন, ভাটিয়ালি ইত্যাদি নানা ধরনের গান রচনায়, এমনকি সুরসৃষ্টিতেও নজরুল তাঁর দক্ষতার পরিচয় দেন।
শেষজীবন:
১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কবি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে বোধশক্তিহীন ও নির্বাক হয়ে পড়েন। বহু চেষ্টা সত্ত্বেও কোনো চিকিৎসাতেই তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়নি। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে কবিকে স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট ঢাকাতে কবির মৃত্যু হয়।
- Question 1: কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা কাব্য জগতে কী অভিধায় অভিহিত?
- Question 2: কাজী নজরুল ইসলাম, তাঁর লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
- Question 3: কবিতার আঙ্গিকের ক্ষেত্রে নজরুল কাকে অনুসরণ করেছিলেন? এই কবির কাব্যের আঙ্গিকগত অভিনবত্ব কোথায়?
- Question 4: 'বিদ্রোহী' কবিতাটির উপর কার প্রভাব আছে?
- Question 5: নজরুল প্রণীত একটি উপন্যাসের নাম করো। উপন্যাসটি কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
- Question 6: নজরুলের প্রথম কবিতাটির নাম কী? কবিতাটি কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
- Question 7: নজরুল বাংলা সাহিত্যে কোন্ কবিতাটির জন্যে সমধিক পরিচিতি লাভ করেছিলেন? কোন্ পত্রিকায় কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়?
- Question 8: নজরুল সম্পাদিত পত্রিকার নাম উল্লেখ করো।
- Question 9: নজরুলকে বিদ্রোহী কবি বলার কারণ কী?
- Question 10: কোন্ কাব্যটির জন্য নজরুলের বিরুদ্ধে রাজদ্রোহের মামলা হয়? তিনি কি কারাবরণ করেছিলেন?
- Question 11: নজরুলের কোন্ কবিতাগুলির মধ্যে রাজনীতির প্রত্যক্ষ ছাপ আছে?
- Question 12: নজরুলের দেশাত্মবোধের পরিচয় পাওয়া যায় এমন ৪টি কবিতার নামোল্লেখ করো।
- Question 13: নজরুলের যৌবন বন্দনার কথা আছে এমন ৪টি কবিতার নাম লেখো।