ইবাদাত

Rumman Ansari   Software Engineer   2024-04-04 11:13:40   108 Share
Subject Syllabus DetailsSubject Details 29 Questions
☰ Table of Contents

Table of Content:


বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম;

উত্তরঃ আল্লাহ পছন্দ করেন এমন প্রত্যেক গোপন ও প্রকাশ্য কথা ও কাজকে ইবাদত বলা হয়।

"ইবাদাত” একটি ব্যাপক অর্থবহ শব্দ। এর মধ্যে আল্লাহর পসন্দনীয় ও তাঁর সন্তুষ্টি হাসিলের সব যাহেরী ও বাতেনী কথা এবং কাজ অন্তর্ভুক্ত। সালাত, যাকাত, সাওম, হজ্জ, সত্যকথা, আমানতদারী, প্রতিবেশীর হক আদায়, মাতাপিতার সাথে ভালো ব্যবহার, ওয়াদা পালন, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে বাধা প্রদান, জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ, পাড়া প্রতিবেশী এবং ইয়াতীম মিসকীনের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন, অধীনদের সাথে ভালো আচরণ, আল্লাহর যিকির, তিলাওয়াতে কুরআন সহ সকল আমলে সালেহ ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত।

এভাবে আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূলের প্রতি ভালবাসা, আল্লাহর রহমতের আশা, শাস্তির ভয়, আল্লাহর প্রতি একমুখী ও বিনয়ী হওয়া, এখলাস, সবর, শোকর, তাওয়াক্কুল ইত্যাদি সকল ভালো কাজই ইবাদাতের মধ্যে শামিল।

ইবাদত অর্থ কি:

ইবাদত আরবী শব্দ; আরবী ভাষার শব্দ হলেও সকল ভাষাভাষী মুসলিমের কাছেই এটি অতীব পরিচিত; এটি একটি প্রসিদ্ধ ইসলামী পরিভাষা; আল কোরআনে এ শব্দটি বিভিন্নভাবে মোট ২৭৬ বার উল্লেখিত হয়েছে।

ইবাদাত শব্দটি আবাদা শব্দের ক্রীয়ামূল; যার অর্থ আনুগত্য করা, দাসত্ব করা, গোলামী করা, বিনয়ী হওয়া, অনুগত হওয়া, মেনে চলা ইত্যাদি; ইসলামী পরিভাষায়, আল্লাহর একত্ববাদকে মান্য করে চলার নামই ইবাদাত; এর বাইরে বা বিপরীতে যা ‍কিছু করা হোক না কেন, তা ইবাদাত বলে গণ্য হবে না।

আরবী মাবুদ শব্দটি ইবাদাত ধাতু থেকে কর্মবাচক বিশেষ্য; এর অর্থ যার ইবাদাত করা হয়। এখান থেকেই আব্দ শব্দটি দাস বা গোলাম অর্থে ব্যবহৃত হয়; কেননা আব্দ যা করে তাই ইবাদাত; মহান আল্লাহ হলেন আমাদের মাবুদ; আর আমরা হলাম তার গোলাম।


ইবাদত কাকে বলে

ইবাদতের পরিচয় দিতে গিয়ে শাইখুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া (র:) বলেন,

ইবাদাত হচ্ছে রাসুলগণের মাধ্যমে আল্লাহ যে বিধান দিয়েছেন তা মেনে চলা। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ যা ভালবাসেন ও পসন্দ করেন এমন সকল প্রকাশ্য ও গোপনীয় কাজ ও কথার নাম ইবাদাত।

ইমাম কুরতুবী (র:) বলেন,

ইবাদাত হলো মহান আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দেওয়া এবং তার দ্বীনের বিধান সমূহের অনুসরণ করা, আর ইবাদাতের মূল হলো বিনয় এবং নিজেকে তুচ্ছ করে প্রকাশ করা।

আল্লামা ইবনে কাসির (র:) বলেন,

ইবাদাতের শাব্দিক অর্থ হল নমনীয়তা। আর পারিভাষিক অর্থে ইবাদাত বলা হয় পরিপূর্ণ ভীতি, বিনয় ও ভালবাসার সমষ্টিকে।

আবুল আলা মওদূদী (র:) বলেন,

ইবাদাতের মূল কথা হল কোন সত্ত্বার বড়ত্বকে মাথা পেতে নেয়া। অতঃপর তার সামনে নিজের স্বাধীনতাকে বিলীন করে দেয়া। অর্থাৎ তার আনুগত্যকে বরণ করে নেয়া।

আমরা এতক্ষণ বিভিন্ন মনিষীর দেয়া ইবাদতের সংজ্ঞা সম্পর্কে জানলাম। আসলে সবচেয়ে সহজ ও সঠিক সংজ্ঞা হল এই যে, তাওহীদ অর্থাৎ আল্লাহর একত্ববাদকে পরিপূর্ণভাবে মেনে চলার নামই ইবাদাত। অতএব ইবাদাতকে ভালভাবে বুঝতে হলে তাওহীদ অর্থাৎ আল্লাহর একত্ববাদকে জানতে হবে। তাই প্রথমে আমাদেরকে আল্লাহর পরিচয় ভালভাবে জানতে হবে। তিনি আমাদেরকে কুরআন ও সহিহ হাদিসের মাধ্যমে তার নিজের নাম ও গুণাবলী সমূহের যে বর্ণনা শিক্ষা দিয়েছেন সেটাই আল্লাহর পরিচয়। সেখানেই তাওহীদের পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা বিদ্যমান রয়েছে। তাওহীদ সম্পর্কে জানতে হলে তাওহীদ সম্পর্কিত আমার আর্টিকেলসমূহ যেমন তাওহীদের পরিচয়, আল্লাহর পরিচয় পড়তে পারেন।