দু'আ ও যিকির - ইসলামী দোয়া ও আল্লাহর স্মরণ

Rumman Ansari   Software Engineer   2024-09-29 09:44:57   298  Share
Subject Syllabus DetailsSubject Details 40 Questions
☰ TContent
☰Fullscreen

Table of Content:

দু'আ ও যিকির সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন, ইসলামের দৃষ্টিতে দোয়া এবং আল্লাহর স্মরণ কেন গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের জীবনে বিভিন্ন দু'আ ও যিকিরের ব্যবহার, আখিরাত ও দুনিয়াতে শান্তি লাভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দোয়া।

জিকিরের গুরুত্ব/ যিকিরের গুরুত্ব

জিকির শব্দের অর্থ স্মরণ, উল্লেখ বা আলোচনা। মুমিনের সকল নেক কাজই যেহেতু মহান আল্লাহর প্রতি মনোনিবেশ এবং তাঁর স্মরণ, সেজন্য সকল নেক কাজই মূলত জিকির। কুরআন-হাদীসে জিকিরকে এমন ব্যাপক অর্থে উল্লেখ করা হয়েছে। তথাপি যেসব ইবাদত একান্ত আল্লাহর স্মরণার্থেই করা হয় এবং যেগুলোকে বিশেষভাবে জিকির নামেই অভিহিত করা হয়েছে—সচরাচর জিকির বলতে সেসব মৌখিক ইবাদতকেই বোঝানো হয়। এখানে আমরা জিকির বলতে সেটাকেই বোঝাব।

জিকির হলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের অদ্বিতীয় উপায়। মুসনাদে আহমদের এক বর্ণনায় জিকিরকে সর্বোত্তম আমল বলে অভিহিত করা হয়েছে। কুরআনে একাধিক জায়গায় যে আমলটি অধিক পরিমাণে করতে বলা হয়েছে তা হলো আল্লাহর জিকির। জিকির আত্মার খোরাক, শয়তানের কুমন্ত্রণা প্রতিরোধের কার্যকর হাতিয়ার, বিপদাপদ থেকে রক্ষা ও দুশ্চিন্তা দূর করার উপায় এবং অল্প সময়ে বিপুল সওয়াব ও মুমিন-জীবনে সৌভাগ্যের সোপান। সহীহ মুসলিমে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুফাররিদগণ অগ্রগামী হয়ে গেছেন। মুফাররিদ কারা? জানতে চাওয়া হলে জবাবে তিনি বলেছেন, যেসব নারী ও পুরুষ অধিক পরিমাণে আল্লাহর জিকির করেন।


জিকির ও দো'আর সর্বোত্তম সময়

দো'আ ও আযকার মুমিন জীবনের অন্যতম জরুরি আমল হওয়ার কারণে সর্বদাই তা পালনীয়। জিকির ও দো'আর কোনো নিষিদ্ধ সময় নেই বললেই চলে, বরং সর্বাবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করা যায়। আল্লাহর কাছে চাওয়ার জন্য রাতের শেষাংশ হলো সবচেয়ে আদর্শ সময়। আর নির্ধারিত দো'আ ও আযকারের সর্বোত্তম সময় হলো সকাল ও সন্ধ্যা। মহান আল্লাহ তা'আলা সূরা আলে ইমরানের ৪১ নং আয়াতে বলেছেন:

وَاذْكُرْ رَبَّكَ كَثِيرًا وَسَبِّحْ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ

'অধিকহারে তোমার পালনকর্তাকে স্মরণ করবে। আর সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করবে।'

একই নির্দেশ সূরা রূমের ১৭ নং আয়াতে, সূরা আহযাবের ৪২ নং আয়াতে এবং সূরা গাফিরের (আল মু'মিন) ৫৫ নং আয়াতেও উল্লেখ করা হয়েছে।

এ কারণে দিন ও রাতের যে কোনো সময়ের চেয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহর জিকির ও তাসবীহে বেশি মশগুল থাকতেন এবং আমাদেরকে সকাল-সন্ধ্যার মূল্যবান সময়ে আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।


ওযু ছাড়া জিকির করা ও তাসবীহ পড়ার বিধান

আলী (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) গোসল ফরজ হওয়ার সময় ব্যতীত অন্য সব অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত করতেন। এছাড়াও বুখারী ও মুসলিমে একযোগে বর্ণিত, আয়িশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবী (সা.) সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির করতেন। সুতরাং ওযু না থাকলেও জিকির করা যাবে। অনেকে মনে করেন, মেয়েদের মাথায় কাপড় না থাকলে জিকির বা দো'আ-দরূদ পড়া যাবে না; এটিও ভুল ধারণা। বরং এমতাবস্থায়ও দো'আ-দরূদ পড়তে কোনো বাধা নেই।


মাসিক ও নেফাস অবস্থায় সকাল-সন্ধ্যার দো'আ ও জিকির

মেয়েদের মাসিক ও প্রসব পরবর্তী স্রাব চলাকালীন অবস্থায় সকাল-সন্ধ্যার আমল এবং যে কোনো দো'আ ও জিকির করতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। এ ব্যাপারে ইমাম যুহরী (রাহ.)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তারা জিকির করতে পারবেন। ইমাম ইবরাহীম নাখাঈ (রাহ.) বলেছেন, ঋতুবতী নারী ও যার ওপর গোসল ফরজ হয়েছে, তিনি আল্লাহর জিকির করতে পারবেন।


দো'আ-দরূদ ও জিকিরের শুরুতে কি বিসমিল্লাহ বলতে হবে?

যে কোনো সাধারণ দো'আ, জিকির ও তাসবীহ পাঠের শুরুতে আ'উযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়তে হবে না। তবে দো'আ ও জিকির হিসেবে কুরআনের কোনো অংশ পাঠ করলে প্রথমবার পাঠের সময় আ'উযুবিল্লাহ পড়তে হবে। আর প্রতিটি সূরা পাঠের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে হবে।


সকাল সন্ধ্যার দোয়া ও জিকির