ইবলিস কে নিয়ে ৭ নং শিক্ষা
Table of Content:
৭ নং শিক্ষা: ইবলিশ তার স্ব স্বভাবে চিহ্নিত হওয়ার পর আল্লাহর কাছে শক্তভাবে চ্যালেঞ্জ করে বললেন যে তোমার এক বান্দার (আদমের) কারণে যখন আমাকে জাহান্নামী হতে হলো তেমন তুমি আল্লাহ দেখেনিও তোমার বান্দাদের আমি বেহেস্তের পথ থেকে ফিরাবই সিরাতুল মুস্তাকীমের উপর আমি আঁড় হয়ে দাঁড়াবই। এ পথে তোমার বান্দাদের আমি যেতে দেবই না। আমি তোমার বান্দাদের ঘেরাও করে রাখব।
১. সামনের দিক থেকে।
২. পিছনের দিক থেকে।
৩. ডাইনের দিক থেকে।
৪. বামের দিক থেকেও।
অর্থাৎ ইবলিস কঠিন শপথ নিল যে তোমার বান্দারা কি করে বেহেস্তের পথে পা বাড়ায় আমি তা দেখে নিবই। কাজেই আমাদের মনে রাখতে হবে এবং ভুললে চলবে না যে, শয়তান আমাদের চারিদিক থেকে ঘেরাও করে রেখেছে। আমরা যদি সার্বিক সাবধানতা অবলম্বন না করি তবে ইবাদতের নাম করে শয়তান আমাদের এমন ভাবে সিরাতুল মুস্তাকীম থেকে সরিয়ে দেবে যা আমরা টেরও পাব না। সে জন্যে আমাদের উচিত ইসলামের উপর টিকে থাকতে হলে কুরআনী জ্ঞান অবশ্যই অর্জন করা এবং শয়তান কোন কোন রাস্তায় কিভাবে আমাদের ধোকায় ফেলতে পারে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান রাখতে হবে। নইলে মনে রাখতে হবে শয়তান তার চ্যালেঞ্জকে কার্যকর করার জন্যে আমাদের প্রত্যেকের পিছনে মরিয়া হয়ে লেগে আছে।
উদাহরণ ছাড়া কথা বললে অনেক সময় মানুষ বাস্তব জ্ঞান লাভ করতে পারে না। তাই শয়তানের ওয়াস-ওয়াসা সম্পর্কে একটি মাত্র উদাহরণ দিচ্ছি যথাঃ
আমাদের সমাজের বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দ্বীনদার লোক বলে থাকেন আল-কুরআনের বাংলা অনুবাদ বা ব্যাখ্যা পড়বে না এতে বিভ্রান্ত হওয়ার ভয় আছে। বাস বহুলোক একথা মেনে নেয়, কিন্তু তারাই হাদীসের বাংলা অনুবাদ প্রত্যহ লোকদেরকে পড়ে শুনিয়ে থাকেন। এদেরকে ইবলিস শিখাল যে খোদ আল্লাহর কথা বোঝার দরকার নেই, শেখো রাসূলের কথা।
এখন প্রশ্ন
১. কুরআনের কথা বাংলায় অনুবাদ করে পড়ায় যদি দোষ হয় তবে হাদীসের কথা বাংলায় অনুবাদ করে পড়ায় দোষ হবে না কেন?
২. যদি রাসূলের কথায় ইসলাম বুঝা ও বুঝানোর জন্যে যথেষ্ট হয় তবে কুরআন নাজিলের দরকারটা কি ছিল?
৩. কুরআনের মধ্যে একটিও জাল আয়াত নেই কিন্তু হাদীস বিভিন্ন ধরণের রয়েছে যার মধ্যে জাল হাদীসও রয়েছে। কাজেই অশিক্ষিত লোকদের যদি জাল হাদীস বাংলায় অনুবাদ করে শোনান হয় তবে তাতে বিভ্রান্ত ছাড়ানোর আশংকা বেশী নাকি যার মধ্যে (আল-কুরআনে) কোন জাল আয়াত নেই তা শুনলে বিভ্রান্ত হওয়ার ভয় বেশী।
৪. আরবী হাদীস যদি বাংলায় অনুবাদ করা জায়েজ থাকে তাহলে আরবী কুরআন বাংলায় অনুবাদ করা নাজায়েজ হলো কোন যুক্তিতে?
৫. ধরে নিলাম যে যারা আল-কুরআনের বাংলা অনুবাদ করেন তারা বেআলেম, কিন্তু যারা হাদীস বাংলায় অনুবাদ করেন তাদেরকে তো অবশ্যই ভাল আলেম বলে আপনারা জানেন। তাহলে সেই বড় আলেমগণ যারা হাদীসকে বাংলায় অনুবাদ করেন তারাই তো কুরআনের অনুবাদ ও করতে পারেন কিন্তু তারা তা করেন না কেন?
৬. খোদ আল্লাহই যখন বলেছেন সুরা আল কাসাসের ১৭,২২,৩২,ও ৪০ নং আয়াতে।
আমি এই কুরআনকে উপদেশ দানের বা উপদেশ বুঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতঃএব কে আছ তোমরা উপদেশ গ্রহণের জন্যে প্রস্তুত। কুরআন বুঝা যখন সজহ তখন আমরা কি করে বলতে পারি যে কুরআন বুঝা কঠিন? এভাবে বলা কি আল্লাহ বিরোধী কথা নয়?
৭. এসব বাস্তব যুক্তি মানতে আমরা কি মনের দিক থেকে প্রস্তুত আছি? এসব বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করেই ইবলিসের খপ্পর থেকে বাঁচতে হবে।
শয়তান যে কত দিক থেকে আমাদের আক্রমণ করে তা চিন্তা করলে অন্য কেউ না হলেও আমার নিজের কথা বলছি। আমি নিজে খুবই অস্তির হয়ে উঠি এবং আল্লাহর নিকট সাহায্য চাই যে আল্লাহ শয়তানের শয়তানীর হাত থেকে বাচাও।
তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে তা হচ্ছে, আল্লাহ আপনাকে মহামূল্যবান জ্ঞান দিয়েছেন এই জ্ঞানকে যদি আপনি সঠিক ভাবে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজে লাগাতে পারেন তবে আপনার ঈমানকে ধরে রাখতে পারবেন এবং শয়তানের চক্রান্ত থেকেও বাঁচতে পারবেন।