সূরা বাকারার ৩৬ নং আয়াতে

Rumman Ansari   Software Engineer   2024-06-12 05:11:18   19 Share
Subject Syllabus DetailsSubject Details
☰ Table of Contents

Table of Content:


১৩. ঐ একই সূরার ৩৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন :

فَأَزَلَّهُمَا الشَّيْطَنُ عَنْهَا فَأَخْرَجَهُمَا مِمَّا كَانَا فِيهِ

অতঃপর শেষ পর্যন্ত শয়তান উভয়কে (হজরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়াকে) সেই গাছ সম্পর্কে প্রলোভিত করে আমার নির্দেশ অমান্য করতে প্রস্তুত করল এবং তারা যে অবস্থায় ছিল তা হতে তাদেরকে দূরে নিক্ষেপ করেই ছাড়ল।

ব্যাখ্যা: শয়তান যার পিছনে লাগে তাকে সে সহজে ছাড়ে না। তার পন্থাই হলো সে মানুষকে যে কোন লাভের লোভ দেখায় তার পর মানুষ লোভে পড়ে যায়। আর শয়তানের লোভে প্রলুব্ধ হয়েই শয়তানী কাজ করে বসে। এখানে শয়তান আদম (আঃ) ও হাওয়া বিবিকে লোভ দেখাল যে এই গাছের ফল খেলে একেবারে ফেরেস্তা হয়ে যাবে। আর বেহেস্ত থেকে বের হতে হবে না। হযরত আদম (আঃ) ও হাওয়া বিবি সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করেছিলেন। তাঁরা কিন্তু আল্লাহর হুকুম অমান্য করতে যাচ্ছি তা চিন্তা করেননি। চিন্তা করেছেন যে একাজ করলে বহুত সওয়াব হবে এবং এর মাধ্যমে আমরা চিরদিন বেহেস্ত থাকতে পারব।

এখন চিন্তার বিষয়:-আজ আমাদের অনেক প্রকার সওয়াবের লোভ দেখান হয় এবং সওয়াবের লোভ দেখিয়ে বেহেস্তে যাওয়ার কঠিন পথ থেকে মানুষকে সরাবার সহজ পথ দেখান হচ্ছে। বলা হচ্ছে এই দোয়া পড়লে ৪০ বছরের বা ৮০ বছরের গোনাহ মাফ হয়ে যাবে আর আমরা বলছি 'স্বহান্নাল্লাহ' এ দোয়ার এত ফজিলত। এর মাধ্যমে প্রকারন্তরে গোনাহের প্রতি ভয় কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। মানুষ মনে করে ২/৫ টা গোনাহ করলে কি আর ক্ষতি হবে। অমুক দোয়া পড়লে তো ৪০ বছরের গোনাহ মাফই হয়ে যাবে। কাজেই ২/১ টা গোনাহের কাজে ভয়ের কিছু নেই।

এভাবে শয়তান অসচেতন লোকদেরকে বহুত বহুত সওয়াবের লোভ দেখিয়ে কিছু না পারলেও কয়েকটা কাজ অবশ্যই পেরেছে। যথাঃ-

(১) শয়তান 'নেহীআনিল মুনকার' থেকে বিরাট একটা গ্রুফকে ফিরাতে সক্ষম হয়েছে।

(২) জিহাদ অপেক্ষা নফল নামাযের মর্যাদাকে বেশী করে দেখিয়ে মুসলমানদের জিহাদী চেতনা খতম করে দিচ্ছে এবং এ ব্যাপারে বিরাট একটা দলকে শয়তান বুঝাতে সক্ষম হয়েছে।

(৩) ইসলামী জীবন যাপনের জন্যে একটা সিলেবাস তৈরী করে দেয়া হয়েছে। যেখানে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) মুসলমানদের জন্যে সিলেবাস করে দিলেন আল-কুরআন ও আল-হাদীস, যে কুরআনের একটা অক্ষরকে পর্যন্ত বাদ দেয়ার অনুমতি নেই। অথচ সেখানে ইসলামের প্রায় ৯০% বাদ দিয়ে আর ১০% আসল রেখে ৯০% মনগড়া কথা ঢুকিয়ে মুসলমানদের জন্যে একটা পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস তৈরী করে দেয়া হলো। আর আমরা কি ও কেন প্রশ্ন ছাড়াই আমরা তা মেনে নিলাম। মেনে নিলাম শুধু সহজ পথে বেহেস্তে যাওয়ার জন্যে।

জেনে রাখুন আল-কুরআন অর্থই হচ্ছে (খাস করে মুসলমানদের জন্যে অবশ্য পাঠ্য) আর আল্লাহর দেয়া অবশ্য পাঠ্য একখানা কিতাব থাকা সত্বেও মুসলমানদের জন্যে আবার নতুন করে অন্য কিছু পাঠ্য হতে পারে? এই অবশ্য পাঠ্যকেও আরবীতে বলে নিসাব।

এভাবে মুসলমানদের মধ্যে শয়তান বহুদল উপদল সৃষ্টি করেছে এবং প্রত্যেক দলই মনে করছে "আমরাই ঠিক পথে আছি” এইটাই আজ আমাদের মুসলিম সমাজের বাস্তব অবস্থা।