ইবলিস কে নিয়ে ৯ - ১১ নং একাদশ আয়াত

Rumman Ansari   Software Engineer   2024-06-12 01:18:48   28 Share
Subject Syllabus DetailsSubject Details
☰ Table of Contents

Table of Content:


সূরা হিজরের ৩০ থেকে ৩৩ নং আয়াত পর্যন্ত দেখুন ইবলিস সম্পর্কে আল্লাহ কি বলেছেন।

৩০. অতপর (আল্লাহর আদেশে) ফেরেশতারা সবাই সাজদা করলো,

৩১. একমাত্র ইবলীস ছাড়া- সে সাজদাকারীদের দলভুক্ত হতে অস্বীকার করলো।

৩২. আল্লাহ তায়ালা বললেন, তোমার কি হলো, তুমি যে সাজদাকারীদের দলে শামিল হলে না!

৩৩. সে বললো (হে আল্লাহ), আমি কখনো এমন মানুষের জন্যে সাজদা করতে পারি না- যাকে তুমি ছাঁচে ঢালা শুকনো ঠনঠনে মাটি থেকে বানিয়েছো।

৩৪. আল্লাহ তায়ালা বললেন, তাহলে তুমি (এক্ষুণি) এখান থেকে বেরিয়ে যাও, কেননা তুমি অভিশপ্ত,

৩৫. অবশ্য তোমার ওপর অভিশাপ হিসাব নিকাশের দিন পর্যন্ত।

৩৬. সে বললো হে রব, অতপর তুমিও আমাকে সেদিন পর্যন্ত অবকাশ দাও যেদিন তাদের পুনরায় জীবিত করা হবে।

৩৭. তিনি বললেন (হাঁ যাও), যাদের অবকাশ দেয়া হয়েছে নিসন্দেহে তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত,

৩৮. (এ অবকাশ) একটি সুনির্দিষ্ট সময় আসার দিন পর্যন্ত।

৩৯. সে বললো, হে আমার রব, তুমি যেভাবে (আজ) আমাকে পথভ্রষ্ট করলে, আমিও মানুষদের জন্যে পৃথিবীতে তাদের (গুনাহের কাজসমূহকে) শোভন করে তুলবো এবং তাদের সবাইকে আমি পথভ্রষ্ট করে ছাড়বো,

৪০. তবে তাদের মধ্যে যারা তোমার খাঁটি বান্দা তাদের কথা আলাদা।

৪১. আল্লাহ তায়ালা বললেন, (আমার সেসব খাঁটি বান্দাদের) আমার কাছ পর্যন্ত (পৌঁছানোর) এটাই হচ্ছে সহজ সরল পথ।

৪২. (হাঁ, এই) গোমরাহ মানুষদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করবে তারা ছাড়া অন্যরা অবশ্যই আমার (খাঁটি) বান্দা, তাদের ওপর তোমার কোনো আধিপত্য চলবে না।

৪৩. অবশ্যই জাহান্নাম হবে তাদের সবার প্রতিশ্রুত স্থান,

৪৪. তাতে থাকবে সাতটি (বিশালকায়) দরজা; এগুলোর প্রতিটি দরজার জন্যে (নিদৃষ্ট) থাকবে এক একটা নির্দিষ্ট অংশ।

৪৫. (অপরদিকে) যারা (আল্লাহ তায়ালাকে) ভয় করে তারা অবশ্যই (সেদিন) জান্নাত ও (তার) ঝর্ণাধারায় অবস্থান করবে;

৪৬. (তাদের বলা হবে,) তোমরা শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে সেখানে প্রবেশ করো।

৪৭. তাদের অন্তরের ঈর্ষা বিদ্বেষ আমি দূর করে। দেবো, তারা একে অপরের ভাই হয়ে পরস্পরের মুখোমুখি সেখানে অবস্থান করবে।

৪৮. সেখানে তাদের কোনোরকম অবসাদ স্পর্শ করবে না, আর তাদের সেখান থেকে কোনো দিন বেরও করে দেয়া হবে না।

৪৯. (হে নবী,) তুমি আমার বান্দাদের বলে দাও, আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু,

৫০. (তাদের এও বলে দাও) নিসন্দেহে আমার আযাবও অত্যন্ত কঠোর।

অনুবাদঃ ফলে সব ফেরেস্তাই সিজদা করলো, কিন্তু ইবলিস সিজদা করলো না। সে সিজদা কারীদের সঙ্গী হতে অস্বীকার করলো। রব জিজ্ঞাসা করলো হে ইবলিস তোর কি হয়েছে তুই সিজদাকারীদের সঙ্গী হলিনা? সে বললো এটা আমার কাজ নয় যে আমি এই মানুষকে সিজাদ করব। যাকে তুমি পঁচামাটি হতে সৃষ্টি করেছ।

উদ্দেশ্য শয়তানের কার্যকলাপ থেকে শয়তানী চরিত্রটা কেমন তা জানা এবং সেইরূপ চরিত্রে যেন নিজের মধ্যে সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা।

উপরোক্ত আয়াতগুলো থেকে মূলতঃ ২টি প্রধান শিক্ষা পাওয়া যাচ্ছে যথাঃ ১. কার জন্ম কোথায়, কোন বংশে ইত্যাদি দেখার কোন বিষয় নয় দেখার বিয়ষ বস্তু হচ্ছে আল্লাহর হুকুম মানা হচ্ছে কি না।

২. আমি বহুদিন থেকে লক্ষ্য করে আসছি এবং এই মাত্র গত সাপ্তাহেও পরীক্ষা হলো যে, এক মসজিদে আমার তাফসির করার দাওয়াত হলো, এ মহল্লায় এক মাদ্রাসার মুহাদ্দিসগণ তারা নিজেরা সেখানে আসেননি এবং ছাত্রদের নিষেধ করেছেন যে তারাও যেন এ মাহফিলে ওয়াজ বা তাফসীর শুনতে না আসে। কারণ আমি কি বলব, তার মধ্যে কুরআন-হাদীসের শিক্ষা আছে কিনা তা দেখা এবং শিক্ষণীয় কিছু থাকলে তার থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা এবং কোথাও কোন ভুল কথা বললে মাদ্রাসর হুজুরদের সেখানে উপস্থিত থেকে আমার যদি ভুল বলা হয় তবে তা কুরআন হাদীসের আলোকে দলীল দ্বারা সংশোধন করে দেয়া, কিন্তু তা না করে হুজুররাও এলেন না এবং ছাত্রদেরও আসতে দিলেন না।

কিন্তু ঘটনাক্রমে ঐ তাফসীর মাহফিল যে মসজিদে হলো সেই মসজিদের ইমাম সাহেব মাদ্রাসার একজন শিক্ষক। কাজেই তিনি তো আর অনুপস্থিত থাকতে পারে না, তিনি ছিলেন, আমার সব কথাই শুনলেন এবং মন্তব্যও করলেন যে, কুরআন থেকে এসব জ্ঞান আমাদের আর্জন করা উচিত। এরপর তিনি আমাকে শেষ পর্যন্ত চিনে ফেললেন এবং বললেন হুজুর আমাকে কি চিনতে পেরেছেন? আমি দেখলাম যে চেহারা যেন দেখা মনে হচ্ছে কিন্তু কবে কোথায় দেখেছি তা মনে করতে পরছিলাম না, আমি এই কথাই ইমাম সাহেবের কাছে বললাম তিনি বললেন দেখুন তো ১৯ বছর পূর্বে আপনি অমুক মাদ্রাসায় গিয়েছিলেন কিনা এবং আমাকে সেখানে দেখেছিলেন কিনা। তখন আমার সব কথা মনে পড়ে গেল এমনকি অনেক কথাই মনে পড়লো যা সে ইমাম সাহেবকে আমি এক এক করে বলতে রইলাম এবং শুনেত রইলেন আর বললেন যে হ্যাঁ, এসব কথাও আমার মনে পড়ছে। পরে পরিচয়ের পর অনেক্ষণ আমার সঙ্গে কাটালেন। আমার তাফসীরের প্রশংসা করলেন উপস্থিত লোকদের সামনে।

বললেন আমি এ হুজুরকে ১৯ বছর পূর্বে থেকে চিনি।--- এরপরও কেন মাদ্রসার অন্য কোন শিক্ষক এলোনা? এলেন না মাত্র একটাই কারণে যে, আমার কথা শোনার পূর্বেই ধারণা করে নিয়েছেন যে, আমি যেহেতু একটা ইসলামী আন্দোলনের সমর্থন করি কাজেই আমার মুখদিয়ে কুরআন-হাদীসের কথা শোনা যাবে না।

কিন্তু উপরোক্ত আয়াত থেকে কি বুঝা গেল? আসলে দেখার জিনিষ তো এইটাই যে আমি যেই হই না কেন সেটা না দেখে আমি কি বলি তাই শোনা বরং আমার প্রতি তাদের খারাপ ধারণা থাকলেও তো তারা সুযোগ পেয়েছিলেন আমার কথা শোনার এবং কিছু ভুল কথা বল্লে জনগণকে সঙ্গে সঙ্গে হুশিয়ার করে দেয়া। নইলে তাদের মাদ্রাসার পার্শ্বে আমি ভুল ওয়াজ করে লোকদের বিভ্রান্ত করব এই নিয়তে তারা এলেন না এবং তাঁদের ছাত্রদের বিভ্রান্তির হাত থেকে রক্ষা করলেন? কিন্তু যারা টাকা দিয়ে সেই মাদ্রাসা চালাচ্ছেন এবং যারা তাদের লজিং রেখেছেন তাদেরকে আমি বিভ্রান্তির পথে নিয়ে গেলে তাদেরকেও তো বিভ্রান্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্যে আমার মাহফিলে উপস্থিত হওয়া উচিত ছিল এবং আমার কথা শেষ হওয়ার পর স্থানীয় জনগণকে বুঝিয়ে দেয়া উচিত ছিল যে এই আগন্তকের কথার মধ্যে কুরআন হাদীসের খেলাফ এই এই কথা বলেছেন। আমার মতে এইটাই তো হুজুরদের করণীয় ছিল। কিন্তু তারা তা করলেন না। এর পিছনে মূল কারণটা কি ছিল? কারণটা কি এই ছিলনা যে অমুকের কথা আমরা শুনবো? এটা তো হতেই পারে না, কারণ আমরা তাঁর চাইতে শ্রেষ্ট।