স্বামী বিবেকানন্দ

Rumman Ansari   Software Engineer   0000-00-00 00:00:00   32 Share
Subject Syllabus DetailsSubject Details
☰ Table of Contents

Table of Content:


স্বামী বিবেকানন্দ

ভূমিকা:

বাঙালির কাছে স্বামী বিবেকানন্দ একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। ভারতের মহান পুরুষদের মধ্যে তিনি অন্যতম। যখন ভারত ইংরেজদের দাসত্বে ছিল সেই সময় আমাদের ভারত মা একজন মানুষকে জন্ম দিয়েছিলেন, যিনি শুধু আমাদের ভারতের নয় প্রত্যেক মানবতার গৌরব, তিনিই হলেন বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ।

জন্ম ও পরিচয়:

স্বামী বিবেকানন্দ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৬৩ সালে ১২ই জানুয়ারি। তার আসল নাম ছিল নরেন্দ্র নাথ দত্ত। ছোটবেলায় সবাই তাকে বিলে বলে জানতো। শৈশব থেকে তিনি খুব চঞ্চল এবং মেধাবী প্রকৃতির বালক ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। অনেকে তাঁকে নরেন বলেও ডাকতেন। তিনি উত্তর কলকাতায় একটি কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবার নাম ছিল বিশ্বনাথ দত্ত এবং মায়ের নাম ছিল ভুবনেশ্বরী দেবী। বিশ্বনাথ দত্ত পেশায় একজন উকিল ছিলেন।

শিক্ষাজীবন:

নরেন তার মায়ের কাছ থেকে প্রথম ইংরেজি এবং বর্ণমালা শিখেছিলেন। কলকাতার মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনে তার স্কুল জীবনের শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়। পড়াশুনার প্রতি তার চিরকাল গভীর আগ্রহ ছিল এবং বলাই বাহুল্য তিনি একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন।

স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৭৯ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ম্যাট্রিক পাশ করে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে এবং তার পর স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হন দর্শন নিয়ে পড়াশুনা করার জন্যে। প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময় তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। গীতা, বেদ, উপনিষদে তার প্রচুর আগ্রহ ছিল।
ঈশ্বর সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার জন্য তিনি দক্ষিণেশ্বরের রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের কাছে দীক্ষা নেন।
স্বামী বিবেকানন্দ বি.এ. পাশ করার পর ভারতীয় সংস্কৃতি বিষয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন শুরু করেন। প্রচুর গবেষণা করে তিনি নিজের মনের সত্য জানার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন।

অবদান:

‘মানুষের মধ্যে ঈশ্বর রয়েছে’ এই বিশ্বাস তিনি নিজের মনে গেঁথে নেন। সারা ভারত ভ্রমণ করে, স্বদেশ প্রেমে মুগ্ধ হয়ে নিজের জাতি নিজের দেশকে সকলের কাছে তিনি তুলে ধরেছেন। ভারতের বিভিন্ন জাতি, বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন ভাষা এবং বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মিশে তিনি নিজের এক নতুন রূপ গঠন করেন এবং নিজেকে তৈরী করেন মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে। শহরে শহরে ঘুরে মানুষের সাথে তিনি দেশের প্রেম, সংস্কৃতি এবং ধর্ম ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন।
১৮৯৭ সালের ১ লা মে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন রামকৃষ্ণ মঠ। তার মূল আদর্শই ছিল সাধারণ মানুষের সেবা করা। তারপর স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড় তৈরী করেন বেলুড় মঠ, যা আজও বিখ্যাত।
সকল ভারতবাসীর দুঃখ দুর্দশা উপলব্ধি করেন তিনি। সাধারণ ভারতবাসীর অশিক্ষা, দারিদ্রতা তাঁর কাছে বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে।
তিনি আমেরিকার শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে যোগদান করেন এবং হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমান করনে।

উপসংহার:

১৯০২ সালে ৪ ঠা জুলাই স্বামী বিবেকানন্দ দেহত্যাগ করেন। ইতিহাসের পাতায় বাঙালিদের রত্ন তিনি। তাঁর বাণী আজও মানুষের অন্তরে প্রেরণা জাগায়। আমাদের যুব সমাজ ওনার বাণী স্মরণ করে যাবে চিরকাল।