- A হ্যাঁ
- Bনা
আল্লাহ তা-আলা মুসলমানদের সাহায্যের জন্য ফেরেশতা প্রেরণ করেন এবং তাঁরা মুশরিকদেরকে তছনছ করে ছাড়েন। আল্লাহ তা'আলা বলেন : “আর স্মরণ কর, যখন তোমার প্রভু-প্রতিপালক নির্দেশ দান করেন ফেরেশতাদেরকে যে, আমি সাথে আছি তোমাদের। সুতরাং তোমরা মুসলমানদের অবিচলিত রাখ; আমি কাফিরদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার করে দেব। সুতরাং তাদের গর্দানের ওপর আঘাত হান এবং আঘাত হান তাদের সর্বাঙ্গে” (সূরা আনফাল, ১২ আয়াত)।
আজ প্রতিযোগিতা চলছিল শাহাদাতের মাধ্যমে অনন্ত সৌভাগ্য লাভের ব্যাপারে আর এ প্রতিযোগিতা চলছিল রক্ত সম্বন্ধীয় ভাই এবং হৃদয়ের গভীর বন্ধনে আবদ্ধ বন্ধুদের মধ্যে। হযরত আবদুর রহমান ইবন 'আওফ (রা) বর্ণনা করেন, বদর যুদ্ধে আমি আমার বাহিনীর মধ্যে অবস্থান করছিলাম। এমন সময় হঠাৎ চোখ তুলতেই দেখতে পেলাম আমার ডাইনে ও বামে দু'জন অল্পবয়স্ক তরুণ। এ দু'জন তরুণকে দেখে আমি খুব আশ্বস্ত হতে পারলাম না। আমি চিন্তা করছিলাম । এমন সময়ে তরুণ দু'জনের একজন তার সাথীর অগোচরে আমার কানের কাছে এসে চুপিসারে বললঃ চাচা! আমাকে একটু আবূ জেহেলকে দেখিয়ে দিন । আমি বললাম : তাকে তোমার কি দরকার? সে বললঃ আমি আল্লাহ্র সঙ্গে প্রতিজ্ঞা করেছি যে, তাকে যেখানেই দেখতে পাই অমনি তার কম্ম সাবাড় করব, অন্যথায় নিজের জীবনটাই বিলিয়ে দেব। অপরজনও তেমনি চুপিসারে একই কথা আমার কানে কানে বলল । হযরত আবদুর রহমান ইবন আওফ (রা) বলেন, আমি আবূ জেহেলের দিকে কেবলই ইশারা করেছি অমনি তরুণ দু'জন বাজপাখীর মতই তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং সেখানেই তাকে লাশে পরিণত করল। তরুণদ্বয় ছিল 'আফরার কলিজার টুকরো নয়নের পুত্তলি।
আবূ জেহেলের পতন হলে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ আবূ জেহেল ছিল এই উম্মতের ফেরাউন।
বদর যুদ্ধে কাফিরদের সত্তরজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি নিহত হয় এবং সত্তরজন বন্দী হয় ।
[তথ্যসূত্র: নবীয়ে রহমত - সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম - সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী - আবু সাঈদ মুহাম্মদ ওমর আলী অনূদিত - পৃষ্ঠা নম্বর: 242] and [বুখারী, বারাআ ইবন 'আযিব (রা) বর্ণিত]
বদর যুদ্ধে মুসলমান পক্ষে আনসারদের আটজন ব্যক্তি শাহাদাত বরণ করেন
[তথ্যসূত্র: নবীয়ে রহমত - সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম - সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী - আবু সাঈদ মুহাম্মদ ওমর আলী অনূদিত - পৃষ্ঠা নম্বর: 242] and [সীরাত ইবন কাছীর, ২য় খণ্ড, ৪৬৩ পৃ.]
যুদ্ধের বিজয়বার্তা ঘোষণার জন্য তিনি দু'জন বিশেষ দূত মদীনায় প্রেরণ করেন। এঁদের একজন ছিলেন হযরত 'আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহা (রা)। তিনি যুদ্ধের সুসংবাদ শোনাতে থাকেন এবং বলতে থাকেনঃ হে আনসার সম্প্রদায়। রাসূলুল্লাহ (সা)-র জীবনের নিরাপত্তা এবং কাফিরদের হত্যা ও গ্রেফতারী তোমাদের জন্য বরকতময় হোক। কুরায়শদের যেসব নেতা ও বীরপুরুষ এ যুদ্ধে মারা যায় তাদের একেকজনের নাম তিনি ঘোষণা করতে থাকেন এবং ঘরে ঘরে গিয়ে এই ঘটনা শোনাতে থাকেন। শিশুরা এসব কাহিনী তাদের সাথে সুর করে ও আগ্রহের সঙ্গে শোনাত, কবিতা পাঠ করত এবং গান গাইত। কিছু কিছু লোক এ সব সংবাদের সত্যতায় বিশ্বাসী ছিল আর কিছু লোক ছিল সন্দিহান ও দ্বিধান্বিত । ইতোমধ্যে রাসূলুল্লাহ (সা) স্বয়ং মদীনায় প্রত্যাবর্তন করলেন। এরপর বন্দীদেরকে নিয়ে আসা হয়। এসব কয়েদীর তত্ত্বাবধানে ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা)-র গোলাম শুকরান । ১
তিনি যখন রাওহা নামক স্থানে পৌছলেন তখন মুসলমানরা অগ্রসর হয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করেন, তাঁকে ও সঙ্গী মুসলমানদেরকে, যাঁদেরকে আল্লাহ তা'আলা বিজয়মণ্ডিত ও গৌরবান্বিত করেছিলেন, মুবারকবাদ পেশ করেন।
সীরাত ইবন কাছীর, ২য় খণ্ড, ৪৭০-৭৩।
কা'ব ইবনুল আশরাফ ছিল একজন বিরাট ইয়াহুদী সর্দার। সে রাসূলুল্লাহ (সা)-কে আগাগোড়া কষ্ট দিত এবং অভিজাত মুসলিম মহিলাদের সম্পর্কে গায়কী কবিতা বলত । বদর যুদ্ধের পর সে মক্কায় গিয়ে কাফিরদের রাসূলুল্লাহ (সা) ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করতে শুরু করে। এমতাবস্থায় সে মদীনায় পৌছে । রাসূলুল্লাহ (সা) তার আগমন সংবাদ পেয়ে বলেন : কা'ব ইবনুল আশরাফ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে খুব কষ্ট দিয়েছে। তার কি কেউ কোন ব্যবস্থা করতে পারে? আনসারদের কিছু লোক এই খেদমত আঞ্জাম দেবার জন্য তক্ষুণি দাঁড়িয়ে গেল এবং তার কম্ম সাবাড় করল । ৪
৪. যাদু’ল-মা'আদ, ২য় খণ্ড, ৩৪৮, সংক্ষেপে ৷
বদরের যুদ্ধে মুহাজির সাহাবীরা সংখ্যা আনসার সাহাবীরা তুলনায় কম ছিলো।
উমায়র ইবনুল হুমাম
[তথ্যসূত্র: নবীয়ে রহমত - সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম - সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী - আবু সাঈদ মুহাম্মদ ওমর আলী অনূদিত - ''ভ্রাতৃত্ববন্ধন ও এর গুরুত্ব" নামক শিরোনাম থেকে "বনী কায়নুকার সঙ্গে ব্যবহার" নামক শিরোনাম পর্যন্ত ]
যখন আবু সুফিয়ান শুনতে পেল রাসূল সাঃ তাঁর বাহিনী নিয়ে এগিয়ে আসছেন তখন সে যমযম ইবনে আমর গিফারীকে ভাড়া করে মক্কায় সাহায্যের জন্য পাঠিয়ে দিলেন।
[তথ্যসূত্র: আর-রাহীকুল মাখতূম বা মোহরাঙ্কিত জান্নাতী সুধা - শাইখুল হাদীস আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরী (রহ.) -অনুবাদ - আব্দুল খালেক রহমানী, মুয়ীনুদ্দীন আহমাদ - পৃষ্ঠা নম্বর: ]