তিনি নিরক্ষর ছিলেন কিন্তু তিনি মূর্খ ছিলেন না?
“তিনি নিরক্ষর ছিলেন কিন্তু তিনি মূর্খ ছিলেন না” বাক্যটি দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণাকে পৃথকভাবে তুলে ধরে। নিচে এই বাক্যের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করা হলো:
নিরক্ষর ছিলেন:
“নিরক্ষর” বলতে বোঝায়, তিনি লিখতে বা পড়তে জানতেন না। এটি সাধারণত শিক্ষার অভাব বোঝায়। অর্থাৎ, তিনি বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাননি বা পেলে সেটি পূর্ণ করতে পারেননি। তার ফলে তিনি কোনো লেখা পড়তে বা লিখতে পারতেন না।
মূর্খ ছিলেন না:
“মূর্খ” বলতে বোঝায়, তিনি জ্ঞান বা বুদ্ধির অভাব বোধ করতেন না। তিনি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পারতেন, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন এবং সঠিক ও ভুলের মধ্যে পার্থক্য করতে সক্ষম ছিলেন। মানসিক ও বুদ্ধিগত ক্ষেত্রে তিনি প্রখর ছিলেন এবং তার চিন্তা-ভাবনা সঠিক ও যৌক্তিক ছিল।
উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা:
-
শিক্ষাগত দক্ষতা না থাকা:
- তিনি হয়তো কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পাননি বা শিক্ষার সুযোগ পাননি।
- এজন্য তিনি পড়তে বা লিখতে জানতেন না, যা তাকে নিরক্ষর করে তোলে।
-
জ্ঞান ও বুদ্ধির উপস্থিতি:
- তিনি জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখেছিলেন।
- তার বিচারশক্তি প্রখর ছিল, তিনি জ্ঞানী ও বিচক্ষণ ছিলেন।
- তিনি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন এবং ভালোভাবে সমস্যা সমাধান করতে পারতেন।
যৌক্তিকতা:
এই ধরনের মানুষদের অনেক উদাহরণ আমরা সমাজে দেখতে পাই। যেমন, আমাদের গ্রাম বা সমাজের অনেক প্রবীণ ব্যক্তি হয়তো কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পাননি, কিন্তু জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে তাদের বাস্তব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রয়েছে যা তাদেরকে জ্ঞানী করে তোলে।
উদাহরণ:
- গ্রামীণ সমাজে একজন প্রবীণ ব্যক্তি হয়তো বিদ্যালয়ে যাননি, কিন্তু তার জীবনজ্ঞান ও অভিজ্ঞতা এতটাই প্রখর যে, তিনি সমাজের মানুষের জন্য দারুণ উপদেশ দিতে পারেন।
- একজন কৃষক হয়তো নিরক্ষর, কিন্তু ফসল চাষের ব্যাপারে তার জ্ঞান ও দক্ষতা অসাধারণ। তিনি জানেন কখন বীজ বপন করতে হবে, কীভাবে জমি প্রস্তুত করতে হবে, এবং কীভাবে ফসল তোলার সময় নির্ধারণ করতে হবে।
সারমর্ম:
বাক্যটি যুক্তিযুক্ত কারণ একজন ব্যক্তি নিরক্ষর হতে পারেন কিন্তু তার মানসিক ও জ্ঞানগত দিক থেকে তিনি মূর্খ নাও হতে পারেন। তিনি জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সমাজে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ও জ্ঞানী হিসেবে প্রমাণ করতে পারেন।